ভোলা প্রতিবেদক ॥ দুটি নদী ও বঙ্গোপসাগরে বেষ্টিত দ্বীপ জেলা ভোলা। জেলার পূর্ব ও উত্তর পাশে মেঘনা নদী অবস্থিত এবং পশ্চিম পাশে তেতুলীয়া নদীর অবস্থান। জেলার দক্ষিণ পাশে রয়েছে বঙ্গোপসাগর। নৌ নিরাপত্তা বিভাগ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত এই নদীগুলো। নদী রক্ষা, নৌযান পরিচালনা সহ সরকারের বহু কর্মপরিকল্পনায় নিয়োজিত বিআইডব্লিউটিএর নিরাপত্তা বিভাগ। জনবল সংকট রয়েছে ব্যাপক ভাবে। মাত্র ২ জন কর্মকর্তা দিয়ে চলছে নদী শাসন। নিয়মের কোন বালাই নেই, অনিয়ম রন্ধ্রে রন্ধ্রে বৈধ নৌযানের চেয়ে অবৈধ নৌযান সিংহ ভাগ। অভ্যন্তরীণ নৌযানের ফিটনেস, নকশা, রেজিট্রেশন, ডিজাইন অনুমোদন,বে-ক্রসিং অনুমতি, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি সহ প্রভৃতি নৌযান পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনায় প্রাতিষ্ঠানিক নিয়মনীতি বাস্তবে নেই। সরকারি রাজস্ব ফাঁকি, যোগদানের মাত্র ১ বছরের মাথায় অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন সহ বহু অভিযোগ ভোলার নৌ নিরাপত্তা বিভাগের পরিদর্শক জসিমউদ্দিনের বিরুদ্ধে।
সুত্রমতে, প্রতিবছরই বসতবাড়ি,ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে নদীতে। সরকার নদী ভাঙ্গন রোধে পর্যাপ্ত ব্যাবস্থা নিলেও ভাঙ্গন ঠেকাতে পারছেনা কিছুতেই। অবৈধ প্রায় ৫০ টি ড্রেজার দিয়ে নদী কেটে সাবার করছে। পৃষ্টপোষকতায় কাজ করছেন ট্রাফিক নিরাপত্তা বিভাগের পরিদর্শক জসিমউদ্দিন। বিনিময়ে মাসিক মোটা অংকের টাকা বাগিয়ে নিচ্ছেন এই কর্মকর্তা। রয়েছে ২’শত অবৈধ স্প্রীড বোট, প্রায় সারে ৫’শত অবৈধ নৌযান, তার মধ্যে যাত্রীবাহী লঞ্চ, মালবাহী বলগেট, ট্রলার, ইঞ্জিন চালিত নৌকা অন্যতম। প্রতিটির থেকে মাসিক ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা তুলছেন পরিদর্শক জসিমউদ্দিন। টাকা না দিলে মিথ্যা মামলা দিয়ে সর্বশান্ত করছেন এই কর্মকর্তা, এমনটাই দাবি করছেন নৌযান ফেডারেশন সভাপিত নুরুল হক। ভোলার খেয়াঘাট,ভেদুরিয়া, ইলিশা, মনপুরা,তজুমদ্দিন, শশীগঞ্জ, হাকিমুদ্দিন, মির্জাকালু, বেতুয়া, দৌলতখান, মতির হাট, দেবীচর,নাজিরপুর ঘাট ঘুরে জানাযায়, সরকার কর্তৃক অভ্যন্তরীণ নৌযানের সার্ভে, রেজিস্ট্রেশন, নৌযানের নকশা, ডিজাইন অনুমোদন, আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে মেরিন কোর্টেএ বিচার কার্য পরিচালনা করা, বে-ক্রসিং অনুমতি প্রদান, নৌ-দুর্ঘটনা তদন্ত, ভ্রাম্যমান নৌ আদালত পরিচালনা, ক্লাসিফিকেশন সোসাইটির কার্যক্রম মনিটরিং করা, সকল ধরনের নাবিকদের মনিটরিং, অভ্যন্তরীণ নৌযান পরিদর্শন, ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনায় সহায়তা প্রদান সহ আরো অনেক কার্য পরিচালনা করে থাকেন। কিন্তু বাস্তবে তার কিছুই নেই। ফিটনেস বিহীন অবৈধ নৌযানে ভরে গেছে ভোলার অভ্যন্তরীণ নৌপথ। রুট পারমিট ছাড়াই ডেঞ্জার জোনে যাত্রিবাহী ট্রলার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের নৌ দুর্ঘটনা। নিভে যেতে পারে শত শত মানুষের জীবনের প্রদীপ। অভিযোগ করছেন ভোলার সচেতন নাগরিক সমাজ। তারা আরো অভিযোগ করছেন যে, প্রভাবশালী রাজনৈতিক মহল ও সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর যোগ সাজসেই বছরের পর বছর চলে আসছে এই অনিয়মগুলো। তারা বিষয়গুলোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। অভিযোগের বিষয়ে কথা হয় ভোলার নৌ নিরাপত্তা বিভাগের পরিদর্শক জসিমউদ্দিনের সাথে। তিনি সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, নৌযান মালিক সমিতি ও নৌযান ফেডারেশনের সকল শালারা চোর। ওদের অবৈধ নৌযানের জন্য প্রতিনিয়ত আমি মামলা করছি, তার পরেও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছিনা। ভোলার ডিসি মহদয়ের সাথে আমার ভাল সম্পর্ক, ওসি সাহেব আমার এলাকার লোক। তারা জানেন যে আমি সততার সাথে ভোলায় কাজ করছি। কোন অনিয়ম করছিনা। ভোলার বিআইডব্লিউটিএর নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক কামরুজ্জামানের সাথে কথা হয়। তিনি পরিদর্শক জসিমউদ্দিনের অনিয়মের বিষয়ে শিকার করে বলেন, জনবল সংকটের কারনে এমনটা হচ্ছে। আমি আমার উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ আলোচনা করে তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেব। এছাড়াও যদি কোন ভুক্তভোগী আমার কাছে লিখিত অভিযোগ করে তাহলে আমি আইন অনুযায়ি ব্যাবস্থা নেব।
Leave a Reply